দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং অবস্থা আরো বেগতিক হয়ে তাপমাত্রা আগের বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তাপপ্রবাহ থেকে শিশুদের রক্ষায় রোদে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, এরি মধ্যে তাপদাহে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে শিশু রোগী ভর্তি বাড়ছে।

আর আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকায় দাবদাহ বেড়ে জনজীবনে আরো অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাধারণত বাংলাদেশে কোনো জায়গায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা হলে সেখানে সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

কিন্তু এরি মধ্যে তীব্র গরমে অসহনীয় হয়ে উঠছে রাজধানী। রোববার পহেলা বৈশাখের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি।

খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অবস্থা আরো ভয়াবহ। দক্ষিণের পশ্চিমাঞ্চলের এই তিন জেলার বেশিরভাগ জায়গায় ৩৮ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা বয়ে গেছে। রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাঙ্গামাটিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপমাত্রায় সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশুরা। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের নিয়ে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

Shishu Hospital

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বৃদ্ধরা। আর প্রভাবটা সবার আগে পড়ে শিশু হাসপাতালের ওপর।

‘এই সময় শিশুদের বাইরে বের না করাই ভালো। প্রচণ্ড হিটের সময় বাইরে বের করাটা অন্যায়,’ বলেন তিনি।

অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে শিশু হাসপাতালের এই পরিচালক বলেন, শিশুদের স্কুল সাধারণত সকালে। কিন্তু ফেরার সময়টা সাবধানে আসতে হবে। যেন তারা ছায়ায় থাকে।

শঙ্কা জাগাচ্ছে হাসপাতালের খবর। ঈদ আর নববর্ষের এই সময়ে শিশু হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম থাকার কথা।

কিন্তু হচ্ছে উল্টো। হাসপাতালে জায়গা মোটামুটি শেষ। রাজধানীর শিশু হাসপাতালে শুধু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে দুইশোর বেশি শিশু। কঠিন এই সময়ে শিশুদের ঘাম যেনো গায়েই না শুকিয়ে যায় সেই পরামর্শ চিকিৎসকদের।

weather

এদিকে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা না থাকায় তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবারের আগে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবারও চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। তবে মঙ্গল ও বুধবার রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ ঝড়ো বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। বুধবার চট্টগ্রাম ও সিলেটের আশেপাশে কিছু বৃষ্টি হতে পারে।

‘তবে যে তাপপ্রবাহ সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে, তা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে,’ যোগ করেন তিনি।

Leave a Response